স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ গত দুদিন যাবত নিখোঁজ রয়েছেন বলে অভিযোগ করছে তার স্ত্রী। আজ রোববার বেলা ২টার গণমাধ্যম কর্মীদের এই তথ্য জানান আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরুন্নেসা।
আবু আসিফ আহমেদ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি সাবেক বিএনপি নেতা ও ওই আসন থেকে পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। গত শুক্রবার দিবাগত সন্ধ্যার পর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন।
এর আগে গত বুধবার আবু আসিফের নির্বাচনী প্রচারণার দায়িত্বে থাকা মুসা মিয়া (৮০) নামের এক বৃদ্ধকে হামলা ও সংঘর্ষ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারের পর মুসা মিয়ার বড় মেয়ে ফাতেমা বেগম জানিয়েছিলেন, আব্বা থেকে দুতলায় আর নিচে আমাদের ব্যবসার আড়তের গদিঘর। রাতে দুটি গাড়িতে লোক আসে আব্বার ঘরের দরজায় ধাক্কায়। আমরা উনাদের পরিচয় জিজ্ঞেস করলে তারা পুলিশ পরিচয় দেন। তাদের গায়ে জ্যাকেট ছিল এবং তারা যে গাড়ি দিয়ে এসেছিল তাতে ডিবি লেখা ছিল। তারা আব্বার সাথে কথা আছে বলে নিয়ে যায়। পরে থানায় গিয়ে উনাকে পায়নি। শহরে এসে ডিবি অফিসেও উনাকে পায়নি। বেলা ১১টায় জানতে পারি আব্বাকে দূর্গাপুর গ্রামের মারামারি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আমার আব্বা বয়স্ক মানুষ। তিনি কোন রাজনৈতিক দল করেন না। আসিফ ভাইয়ের সাথে পারিবারিক সম্পর্ক বলে উনার নির্বাচন করছেন।
আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরুন্নিছা বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে আসিফকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার মুঠোফোনটিও বন্ধ রয়েছে। সে কোথায় এবং কি অবস্থায় আছে তা বুঝতে পারছি না। প্রতিনিয়ত আমাদের হুমকি ধমকি দেওয়া হচ্ছে। বাড়িতে পুলিশ এসে অযথা তল্লাশি করে হয়রানি করছে। বাড়ির সামনেও কিছু পুলিশ আসা যাওয়া করছে। এখন নির্বাচনে যে ভোট কেন্দ্রে এজেন্ট দিব, তাও খুঁজে পাচ্ছি না। কারণ সবাইকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাদের ভয়ে আমি নিজেই পালিয়ে ছিলাম। আজকের মধ্যে খোঁজ না পেলে রাতেই মধ্যেই একটা কিছু করব।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বাসায় কোনো লোক আসতে পারে না। কয়েকজন লোক বাসার সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। কাজের লোক এলেও ছবি তুলে রাখে, ভিডিও করে রাখে। এভাবে তো সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। তারা একজনকে জেতাবে এটি আগেই বললেই তো পারতেন। কেন আমাদের এত টাকা খরচ করাল?
এই বিষয়ে জানতে চাইলে আশুগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান বলেন, আবু আসিফ আহমেদের পরিবার থেকে এমন কোন বিষয়ে লিখিত দেওয়া হয়নি। আর তার বাড়ির সামনে যে লোকজনের ছবি তোলার কথা বলা হচ্ছে, তা আমরা অবগত নই। অন্য কোন সংস্থার লোকজন হতে পারে।
উল্লেখ্য, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিক হবে। এতে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এরা হলেন- বিএনপির বহিস্কৃত ৫ বারের সাবেক সাংসদ আব্দুস সাত্তার ভূইয়া, জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হামিদ ভাষানী, সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা, জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ। এরমধ্যে জিয়াউল হক মৃধা প্রতীক বরাদ্দের পর বিবৃতি দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এছাড়া এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ না করলেও উকিল আব্দুস সাত্তার ভূইয়া সমর্থক গোষ্ঠির ব্যানারের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, এমপিরা, জেলা ও উপজেলার নেতারা আব্দুস সাত্তার ভূইয়ার পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply